স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পালিত হোক কুরবানি
প্রতি বছরের ন্যায় আবারও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছালো অন্যতম দুই প্রধান ধর্মীয় উৎসকের এতটি প্রবিত্র ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদ। ঈদকে ঘিরে নানান বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ উৎসব আমেজে মেতে ওঠে৷ মানুষে-মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পায়, ঈদ মানুষকে ত্যাগ ও আনন্দের মহিমায় মহিমান্বিত করে তোলে৷
একদিকে এগিয়ে আসছে ঈদ অপরদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত আমাদের প্রাণের বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব। দেশ-বিদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুর মিছিলও হচ্ছে লম্বা। এমনকি চলতি জুলাই মাসে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ৷Advertisement
ইতিপূর্বে করোনা মহামারির মধ্যে ৩ টি ঈদ গত হয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল করোনা এসেছে হয়তো দ্রুতই চলে যাবে; কিন্তু সেটি হয়নি বরং নিত্য নতুন রুপে দেখা দিচ্ছে এ মহামারি।
গবেষকরা বলছেন বাংলাদেশ করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে। সতুরাং আমাদেরকে সচেতন থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে সর্বোচ্চ স্বাস্থবিধি মানতেই হবে।
ধর্মীয় উৎসবসহ সব উৎসবের মধ্যে কুরবানির ঈদ উৎসব সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কেননা এই সময় অনেকে কর্মস্থল থেকে নিজেদের আপন ঠিকানায় চলে যায়। কুরবানি ঈদে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পশু কুরবানি করে। আবার পশু কেনা-বেচার দেশের নানান প্রান্তে হাট-বাজার বসে থাকে।
সম্প্রতি মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সারাদেশে প্রায় ১৫ দিন কঠোর লকডাউন চলমান ছিল এর ফলে হাট-বাজারসহ প্রায় সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। কিন্তু ঈদ উৎসব উপলক্ষ্যে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক গণপরিবহনসহ সব কিছুই কয়েকদিনের জন্য আগের মতো চালু করা হয়েছে।
আবার যানবাহনসহ শপিংমলগুলোতেও ব্যাপক জনসমাগম ও উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। আবার স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত ঈদের নামাজ ঈদগাহে কিংবা মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তাই সেখানেও জনসাধারণের ভিড় হবে।
ফলে করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ সচেতনতা ছাড়া জনসাধারণের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে নানান অনিয়ম দেখা দিতে পারে। তাই মহামারি করোনা থেকে নিরাপদ ও সুস্থ থাকতে নিজ নিজ ব্যক্তি সচেতনতাই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী উপায়।Advertisement
সুতরাং গণপরিবহনে যাতায়াত, পশু ক্রয়-বিক্রয়, ঈদের নামাজসহ সব কিছুতেই যেনো স্বাস্থবিধি ঠিক থাকে এটি খেয়াল রাখা সবার জন্য জরুরি। এমনকি পশু জবেহ করার পরে পশুর মল-মূত্র, রক্তসহ সব বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলা একান্তই জরুরি।
খেয়াল রাখতে হবে
নিজেদের একটু অসচেতনতা যেনো ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। সুতরাং প্রত্যেকেই সঠিকভাবে মাস্ক পরে ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলা জরুরি। ব্যক্তি সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনকেও রাখতে হবে যথাযথ ভুমিকা।
সর্বোপরি, কুরআন-সুন্নাহ ও রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ মেনে কুরবানির ঈদ ও পশু জবাইয়ের এ অনুষ্ঠান যেন সবার জন্য নিরাপদ হয়; সে বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রত্যেকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কুরবানি মানুষকে যে ত্যাগ, বিসর্জন, ভালোবাসা ও নৈকট্যের শিক্ষা দেয়; তা আগামী কুরবানি পর্যন্ত নিজেদের মাঝে অটুট রাখা ঈমানের একান্ত দাবি। সুতরাং সব সময় প্রত্যেকের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধিসহ রাগ, ক্ষোভ, পরশ্রীকাতরতা সব কিছু থেকে দূরে থাকাই মুমিন মুসলমানের জন্য একান্তই জরুরি।
আল্লাহ তাআলা সবাকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মিনেই পবিত্র ঈদুল আজাহ ও কুরবানির উৎসব উদযাপন করার তাওফিক দিন। আমিন।
No comments