× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



দাম্পত্য জীবনের ত্রিশ বছরে আসিফ দম্পতি



আজ ৮ জুলাই দাম্পত্য জীবনে ত্রিশ বছরে পর্দাপন করলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ দম্পতি। তাঁর ফেসবুক ওয়ালে তাই লিখেছেন দাম্পত্যজীবনের খুনসুটি। সেটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-

কত আগে কত ছোট ছিলাম ! তারপর উনিশ বছর তিন মাস বয়সে ডেসপারেড ভালবাসার ফলশ্রুতি হিসেবে বেগমের সাথে এক ছাদের নীচে থাকা শুরু। আমি সবসময়ই ক্যাজুয়াল যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে। শুধু রাগের উপর নিয়ন্ত্রনটা রাখার চেষ্টায় থাকি। বিয়ের পর কঠিন সময়গুলোকে জয় করেছি কখনো হেরে, কখনো জিতে। একজন সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে আমার কাছে স্পোর্টসম্যানশীপটাই আসল। দেখতে দেখতে আমাদের দাম্পত্য জীবন ত্রিশ বছরে মাথা ঢুকিয়েছে। অথচ মনে হচ্ছে সেদিনকার কথা। তিনিও ছোট ছিলেন আমিও ছোট ছিলাম। ছোট বয়সেই আমরা বাবা মা হয়েছি। ঘোরের মধ্যেই ঘটে গেছে সব।
অপমান আর তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মগজে কামড় দিয়ে এখনো একই কাঁথার নীচে থাকি। ঝড়ের প্রকারভেদ নিয়ে মাথা ঘামাই না, জোর বাতাসে পাল হাওয়ার পক্ষে মেলে দিয়ে আমরা এখনো একসাথে ভেসে আছি। বেহিসেবী জীবনে আমার নিয়ন্ত্রন একটা জায়গায় আটকে রেখেছি, সেটা হচ্ছে পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ। চেষ্টা করেছি নিজের মত, হয়তো ভাইবোনসহ কাউকেই হ্যাপী রাখতে পারিনি। অন্তর থেকে আন্তরিক ছিলাম সবসময়, বোঝাতে পারিনি। বিশেষ করে শো’বিজের পেশাদার কর্মী হিসেবে যেভাবে নিজেকে পরিচালিত করেছি, তাতে অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আমি ক্ষমা চাচ্ছি না কারো কাছে, কারন আমাকে ভুল বোঝার কারনগুলো নিয়ে নিত্যই ভাবি। সংসার আর কাজ আমার হিসেবে একসুত্রে গাঁথা, সক্ষমতাই আসল আনন্দ। ছেলেরাও বড় হয়ে গেছে যথেষ্ট, তাদের আর বোঝানোর কিছু নেই। আবার আমাকে তারা বোঝাবে সেই ম্যাচুরিটি আসতে দিবোও না। বাবা মা সন্তানের মধ্যে বোঝাপড়া হয়না কখনোই, শুধুই দায়িত্ববোধ কাজ করে। এখানে উভয়পক্ষের স্মার্টনেস প্রয়োজন যেন ভবিষ্যতে আক্ষেপ করতে না হয়।
আমি কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট অর্গানাইজড। সব শুনেও নিজের সিদ্ধান্তে এক সূতা ছাড় দেইনা। সফলতার সাথে উশৃঙ্খলতাও আমার জীবনে এসেছে। বারবার সংযত হয়ে প্রতিবারই নিজের ইচ্ছায় ব্যারিকেড ভেঙ্গেছি। অভ্যাস বদলাতে পারবোনা, আমার সরল চলার পথটা মেজাজী হাইওয়েতে গিয়ে মিশেছে। কেউ মানুক আর না মানুক, বেগম ঠিকই মেনে নেয়। নিতেই হবে কারন আমি এরকমই। ত্রিশ বছরের দাম্পত্য জীবনটা আমার কাছে স্নেহের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কামব্যাক শতরানের মতই। নিজেকে চিনি রগে রগে, আমি যে খুব ভাল মানুষ সেটা কখনোই দাবী করিনি। প্রেম শেষে বিয়ে আর সংসার কোন ঘানি টানা নয়। এটা জীবনের নিয়মিত একটা রুটিন মাত্র। মৃত্যু ছাড়া এই খেলা সাঙ্গ হবার নয়। বেগম যতই বুদ্ধিমতি বা স্মার্ট হউক, সিদ্ধান্ত আমার। আমার টেরিটোরিতে আমি স্বৈরাচার, বেগম পছন্দ না করলেও বিরোধিতা করেনা। বাকী জীবনও একসাথে কাটাবো ইনশাআল্লাহ, জীবনযুদ্ধে সফল আমরা। ব্যর্থতাগুলো থাকুক সংসদীয় মহিলা আসনের মত অলঙ্কার হয়ে। বেগম ধন্যবাদ নিতে চায়না, তাই দিলাম না। শুধু দোয়া করি সুস্থ্য থাকো আর আমার উপর নজরদারী চালু রাখো। তোমার মত ভালবাসাবাসির এক্সপ্রেশন আমার আসেনা, তবুও ভালবাসি এটাই সত্য। মৃত্যু ঘুরছে চারপাশে, এটাই হয়তো শেষ বর্ষাবসন্ত উদযাপন আমাদের। ভাল থেকো নিজের মত।
বিয়েবার্ষিকীর শুভেচ্ছা।
ভালবাসা অবিরাম…
 আসিফ দম্পতির বিবাহ বার্ষিকীতে শুভ কামনা আমাদের সংযোগ পরিবারের পক্ষ থেকে।

No comments