× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



প্রিয় চাটমোহরকে নিয়ে শাহনাজ খুশীর আবেগঘন অনুভূতি


 
শাহনাজ খুশী। অভিনয় জগতের একটি সুপরিচিত নাম। নিজস্বতা ও অভিনয়ে পারদর্শীতায় জায়গা করে নিয়েছে পাঠকের মনে। পাবনা জেলার চাটমোহরকে নিয়ে তার আবেগঘন অনুভূতি প্রকাশ করেছেন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক ওয়ালে। দর্শকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো

বিভাগীয় শহর গুলোতে যাদের জন্ম,বেড়ে ওঠা,তাদের কথা ভিন্ন।কিন্তু যারা থানা/ইউনিয়ন পর্যায়ে জন্ম,বেড়ে উঠা,তাদের জন্য সে সময় একটা রেল ষ্টেশন/বাসস্ট্যান্ড/থানা অনেক বড় বিষয়।আমাদের এলাকায় আমরা ছিলাম সেই গর্বের অধিকারী।আমাদের বাড়ীর নিকটবর্তী ছিল থানা,একটু দুরে রেল ষ্টেশন।
আমার বুদ্ধি হবার পরেই বাড়ীতে শুধু বিদ্যুৎ দেখা নয়,রীতিমত রাইস এন্ড ওয়েল মিল দেখেছি।"রেজা,ওয়েল এন্ড রাইচ মিল" ছিল আমাদের! সেদিক থেকে আমরা মোটামুটি বেশ ভাগ্যবান বলা চলে।গ্রামে,বোনের শ্বশুর বাড়ী বেড়াতে গেলে,ঝুড়ি/মুড়ি খেতে দিয়ে তাদের বাড়ীর মানুষ বলতো,"খাও বুন,তুমরা থানা বাজারের,টাউনের মানুষ,আমারে গিরামের খাবার খাও"!আমরা ছিলাম টাউনের মানুষ!!
ছোট বেলায়,মা খালার বাড়ী ভেড়ামারা যেতো রেল গাড়ীতে।স্টেশনে যেতো টমটমে করে।(ঘোড়ার গাড়ী),টমটমের মুখটা কাপড় দিয়ে ঘিরে এক ধরনের পর্দা করে দিত।ভেতরে আমরা!কি ভয়ানক উত্তেজনা।কারন মা যেতেন অনেক বছর পর পর।মায়ের মুখের সে আনন্দ আমরা দেখতে পেতাম।তার গালে গোলাপী আভা হতো,বার বার ঘোমটা টা টানতো,আর উদাসী হতো,হয়তো মনে মনে,মিলন দৃশ্য কল্পনা করতো!! 
                                                                    advertisement

 
তখন "চাটমোহর" লেখা এই বোর্ডটা ছিল ধুসর খয়েরী রংয়ের।জায়গায় জায়গায় রং ওঠাও ছিল।রেল গাড়ীটাও ছিল একই রংয়ের।তখন থেকেই এই ষ্টেশনের "চাটমোহর" লেখা বোর্ডটা আমার হার্টবিট বাড়ানো আনন্দের নাম।ট্রেনের সিগন্যাল পরতো,সেটাকে বলতো,'পাখা, পড়া।এ সব কিছু কোনদিনই আমার কাছে ঝাপসা হয়নি।
ছোটবেলার এ সব অনুভুতি গুলো আমার সামনে চলার পথ বড় রকম বাঁধাগ্রস্থ করেছে।আমি প্রান ভরে আনন্দিত হতে পারিনি।
দীর্ঘদিন আমি আমাদের বাড়ী গিয়েছিলাম না।(১৭ বছর প্রায়)।
যখন যাওয়া শুরু করেছি,তখন হাইওয়ে ধরে গাড়ীতে করে! কিন্তু আমার মন পড়ে থাকতো এই ষ্টেশনের গন্ত্যবে!
এই ষ্টেশনের খয়েরী রংয়ের লেখায়!
২৪ বছর পর,(দুই বছর আগ) ট্রেনে,এই স্টেশনে যখন নেমেছিলাম,কত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে আমাদের নেবার জন্য,অথচ,আমি সব সৌজন্যতা ভুলে দৌড়ে গিয়েছিলাম ঐ বোর্ডের কাছে! বদলে গেছে সেই রং/লেখা/ ষ্টেশনের আদল! "চাটমোহর লেখা নতুন বোর্ড আমাকে চিনলো কিনা সে আমি জানিনা! কিন্তু আমি সেই একই আবেগে ভেসেছি!!!
কারো কারো জীবনের অনেক গুরুত্বপর্ন অংশ আঁটকে যায় এমন রঙে/গন্ধে/ শব্দের স্মৃতিতে!!
সবাই যখন খুব করে আধুনিকতায় মুড়ে,শহুরে হতে ব্যস্ত,তখন আমি আমার জীবনের সব অলি গলিতে ,এমন নানান ল্যাম্পপোস্ট/ষ্টেশন/ পোষ্ট অফিসের ঝোলানো লাল চিঠির বাক্সে/ খুব নিকট সম্পর্কের,তাদের পুরনো মুখের আদলে/অতীত কোলাহলে হোঁচট খাই!! রক্তাত্ব হই! আবার ফিরে যাই!! কারন,এ ব্যাথায় আমার একান্ত আপন হয়ে আছে,সমস্ত স্বত্তায়! যদিও সবই বদলে গেছে,নিজ প্রয়োজনে,এবং খানিকটা অপ্রয়োজনেও।💙🖤💙🖤
বিঃদ্রঃপুন: (পোষ্ট।এটা সব সময় থাকুক ওয়ালে।)

No comments