× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



স্বপ্ন পূরণ হবে কি নেইমারের


রণহুংকারটা নেইমার দিয়ে রাখলেন, তবে একটু অন্যভাবে!

কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল উঠছে, এটা অনুমিতই ছিল। এই ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে পেরু হারিয়ে দিলে সেটা অঘটন হতো বৈকি। অবশ্য পুরো টুর্নামেন্টে ব্রাজিল যেভাবে খেলেছে, তাতে শেষ চারে গতকাল ১-০ গোলের জয়টাকেই বরং কিছুটা ম্লান লাগছে। এর চেয়ে ঢের ভালো ব্রাজিল আগে বেশ কয়েকটা ম্যাচে খেলেছে।

ফাইনালের টিকিট কেটেই নেইমার মনের কথাটি বলে দিলেন,‘আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে চাই।’ আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, শিরোপা জেতার স্বপ্ন যখন দেখেছেন, পরাশক্তি ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়েই জিততে চান। তাহলেই না বাড়ে জয়ের মাহাত্ম্য। যে কারণে নেইমার ফাইনালে উঠেই বলেছেন, অন্য সেমিফাইনালটায় তিনি আর্জেন্টিনার সমর্থক! নাহ্, ব্রাজিল-ভক্তদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। বন্ধু মেসির প্রতি তাঁর দুর্বলতা থাকতেই পারে, কিন্তু ফাইনালে সেই বন্ধুর দলকে পেলে ‘শত্রু’ হয়ে যেতে ভুল করবেন না নেইমার।

                                                                        বিজ্ঞাপন


ভালো কথা, কোপার ফাইনালে ব্রাজিলের সঙ্গী আর্জেন্টিনা হচ্ছে তো? লেখাটা যখন পাঠকেরা পড়ছেন, তখন দ্বিতীয় সেমিফাইনালের এসপার-ওসপার হয়ে গেছে। বিশ্বের তাবৎ ফুটবলপ্রেমীরা জেনে গেছেন স্বপ্নের ফাইনালটা হচ্ছে কি না। তাহলেই না সুযোগ তৈরি হবে নেইমারদের স্বপ্নপূরণের।

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচ মানেই অন্য রকম এক রোমাঞ্চ। এ ম্যাচের সম্ভাবনার হদিস পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও কিন্তু এরই মধ্যে উত্তপ্ত। এই তো সেদিন ইকুয়েডরের বিপক্ষে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে মেসির সেই দুরন্ত ফ্রি-কিকের গোল নিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা দুকথা লিখেছেন কী লিখেননি, ব্রাজিল সমর্থকেরা নানা জায়গা থেকে রবার্তো কার্লোসের বিভিন্ন সময়ে করা ফ্রি-কিকের গোলের ভিডিও ভাইরাল করে ফেললেন। এমন পাল্টাপাল্টি না হলে আর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথের মজা কোথায়!

মেসি এবারের কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার শক্তির উৎস, ব্রাজিলের বেলায় নেইমারও ঠিক তা-ই । গোটা টুর্নামেন্টেই নেইমার-জাদুর পরশেই দুর্দান্ত ব্রাজিল। পেরুর বিপক্ষে ম্যাচেও তো বাঁ প্রান্ত থেকে নেইমারের বাড়িয়ে দেওয়া বলেই গোল করে দলকে জেতালেন লুকাস পাকেতা। নেইমারের কাঁধে সওয়ার হয়েই তো ব্রাজিলের এগিয়ে যাওয়া। কোপার একটি ম্যাচেই নেইমারকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। ইকুয়েডরের বিপক্ষে সে ম্যাচটা ড্র করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাদের। নেইমার যে ব্রাজিলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বোঝা যাবে একটা পরিসংখ্যানেই। ব্রাজিলের জার্সিতে ১১০ ম্যাচ খেলে ৬৮ গোল করেছেন। ৪৯ বার সতীর্থদের গোল করতে সহায়তা করেছেন। সব মিলিয়ে ১১৭টি গোলে অবদান—ব্রাজিলের জার্সি গায়ে নেইমার রীতিমতো ‘অবিশ্বাস্য’ই।

কোপার নকআউট পর্বে অবশ্য সর্বশেষ চারটি দেখায় প্রতিবারই ব্রাজিলের কাছে হেরেছে আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ হারটা ২০০৭ সালের ফাইনালে। মেসি সেবারও ছিলেন। কিন্তু দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে উঠেও রবিনহো-আলভেসদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি আর্জেন্টিনা। এবার সে ইতিহাসটা পাল্টে দিতেই চাইবে আর্জেন্টিনা, চাইবে বদলা নিতে। নেইমার যে কারণে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে চেয়েছেন, সেই একই কারণে মেসিরাও ফাইনালে ব্রাজিলকেই চান হয়তো।

এমনিতে এবার কোপা নিয়ে বড় অনিশ্চয়তাই ছিল। শুরুর মাত্র কয়েক দিন আগে রাজনৈতিক অস্থিরতায় যৌথ আয়োজকের একটি কলম্বিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় টুর্নামেন্ট। এরপর করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আর্জেন্টিনাও স্বাগতিক হওয়ার অধিকার হারাল। কোপা হয় কি না, সেটি নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। ব্রাজিল এগিয়ে আসার পরেও অনিশ্চয়তা। করোনায় যে জেরবার তারাও। তবে সেই শঙ্কা পাশ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট হয়েছে এবং প্রায় শেষের পথে।

ইউরোর মতো কোপা এত ঝলমলে টুর্নামেন্ট কখনোই ছিল না। আর এবার দর্শক না থাকায় যেন আরও একটু বর্ণহীন লেগেছে লাতিন ফুটবলের এই শ্রেষ্ঠত্বের আসর। তবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল, মেসি-নেইমার দ্বৈরথ দিয়ে যদি এর শেষটা হয়, তাহলেই হবে মধুরেণ সমাপয়েৎ।

করোনার এই দুঃসময়ে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে!

 সূত্রঃ প্রথম আলো

 

No comments