চিঠি লিখে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
‘আমি কারও দিকে তাকিয়ে হাসি নাই, মা ভুল বুঝে আমাকে বকাঝকা করেছে। আমি আমার পরিবারকে ভালোবাসি। তাই ওষুধ খাইছি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বিদায়’-মৃত্যুর আগে এমন চিঠি লিখে গেছে পাবনা সদর উপজেলার হামচিয়াপুর গ্রামের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী (১৪)। গতকাল বুধবার দুপুরে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের কারণে মৃত্যু হয়েছে তার।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মেয়েটির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছে। তার বাড়ি থেকে দু’টি চিঠি জব্দ করা হয়েছে। যেখানে মৃত্যুর আগে লিখে গেছে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। কোনো ছেলের দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখে তার মা ভুল বুঝে তাকে বকাঝকা করেছে। এ রকম আরও বেশ কিছু কথা লিখে গেছে চিঠিতে।
ওসি আমিনুল বলেন, হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকেরা মেয়েটির মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ‘আন পয়জনিং হার্ট অ্যাটাক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অর্থাৎ বিষাক্ত কোনো কিছু খাওয়ার পর হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ADVERTISEMENT
এদিকে, স্কুলছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে আজ সকালে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় একই গ্রামের এক কিশোরকে (১৭) আসামি করা হয়েছে।
সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের নারী পুলিশ সদস্যরা মেয়েটিকে পরীক্ষা করে রক্তক্ষরণের কিছু নমুনা দেখতে পায়নি। যেহেতু পরিবার ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন, সে অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সব ঘটনা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তারপর চিকিৎসকের প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সবগুলো খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত কিশোরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে ওই ছাত্রীকে নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল একই এলাকার এক কিশোর। তার উত্ত্যক্তের কারণে ওই স্কুলছাত্রীকে পার্শ্ববর্তী নানার বাড়িতে রেখে পড়াশোনা করানো হচ্ছিল। কয়েক দিন আগে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে বাড়িতে আসে ওই স্কুলছাত্রী। গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলছাত্রী বাড়িতে একা থাকার সুযোগে তাকে ধর্ষণ করে ওই কিশোর। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
No comments