গরিবদের শতকোটি টাকা মেরে উধাও জসিম
প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের শতকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪-এর একটি দল। প্রতিষ্ঠানের মালিক জসীম উদ্দিনসহ মালিকপক্ষের সবাই পলাতক। র্যাব বলছে, জসীম উদ্দিন যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সেই চেষ্টা করছে তারা।
মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, সমবায় সমিতির নামে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জসীম উদ্দিন ২৫-৩০ হাজার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের ১১০ কোটি টাকা লোপাট করেছে। বর্তমানে তাদের অ্যাকাউন্টে আছে ৮০ লাখ টাকার মতো। ভুক্তভোগীরা পোশাককর্মী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি-ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মীসহ সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ। কাগজে-কলমে প্রতিষ্ঠানটির সদস্যসংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এর আগে গত সোমবার বেলা দেড়টা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে র্যাব ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। মিরপুরের নান্নু মার্কেট এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় থেকে ১৭টি মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব বই, ২৬টি চেক বই, দুটি হিসাব বই, তিনটি সিল, ১২০টি সঞ্চয়ী হিসাবের বই, পাসপোর্ট, টাকাসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘জসীম উদ্দিন একজন অলৌকিক, ভৌতিক চরিত্র। সমিতির সদস্যদের তিনি দেখা দেন না। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি দেশেই আছেন। আমরা সব বন্দরকে জানিয়ে দেব, তিনি যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন।’ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় জসীম উদ্দিনের স্ত্রী, শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালিকা আছেন বলেও জানান তিনি।
র্যাবের ভাষ্য, জসিম উদ্দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে একটি ইনসিওরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ২০০৩ সালে তিনি কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড চালু করেন। সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন নেন ২০০৬ সালে। সেটি নবায়নও করিয়েছেন। এমনকি ২০১৯ সালে অধিদপ্তর নিরীক্ষাও করেছে প্রতিষ্ঠানটির। তখনো প্রতারণার বিষয়টি বেরিয়ে আসেনি। র্যাব ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির কাজকর্ম সম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করে।
কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কোম্পানি লিমিটেড নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা রাখত। ১ লাখ টাকা জমা রাখলে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত তারা। আর যে গ্রাহক জোগাড় করে দিত, তাকে দেওয়া হতো ১ হাজার টাকা। আবার সঞ্চয়ী হিসাবও চালু করেছিল তারা। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, কেউ যদি মাসে ১ হাজার টাকা জমা দিতেন, তাহলে পাঁচ বছর পর তাকে ৯০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর টাকা ভেঙে ভেঙে প্রথম কয়েক মাস ২-৪ হাজার টাকা করে দিলেও পরে তারা ঘোরাতে শুরু করে।
Advertisement (madimart)
Advertisement (sandha)
Advertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)
No comments