× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



ইউপি নির্বাচনে মায়ের বিরুদ্ধে মেয়ের যুদ্ধ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার তেতুঁলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে মা ও মেয়ের ভোটযুদ্ধে নেমেছেন ওই ইউনিয়নের ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডে। ওই তিনটি ওয়ার্ডে গেল দুইবারের নারী ইউপি সদস্য জীবন নাহার হেলিকাপ্টার প্রতীকে এবারও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে মায়ের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন মেয়ে বুলবুলি আকতার। বুলবুলি বক প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মত ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। এ নিয়ে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মা মেয়ে একই পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ভোটারদের মাঝে যেমন বিরক্তি কাজ করছে। সেই সঙ্গে ভোটারেরাও পড়েছেন দ্বিধা-বিভক্তিতে। মা মেয়ে দুজনই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ জোরেসোরে। নির্বাচনে জেতার জন্য মা-মেয়েই দিচ্ছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনের কারণে মা ও মেয়ে দুজনই একে অন্যের বাড়িতে যাওয়া-আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন গত ২০ দিন ধরে। গত ইউপি নির্বাচনের প্রচারণায় নিজের শেষ নির্বাচনের কথা জানান মা জীবন নাহার। এবারের নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে মেয়েকে ছাড় দেয়ার কথা জানালেও আবারো প্রার্থী হন তিনি। এ কারণেই তাদের মাঝে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ভোটারেরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জীবন নাহারের মৃত স্বামী ইসমাইল হক দীর্ঘদিন ইউনিয়ন পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী জীবন নাহার এলাকাবাসীর অনুরোধে নারী ইউপি সদস্য পদে গত দুইবারের ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়েছেন। বর্তমানেও সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে রয়েছেন। এর আগে মা-মেয়ের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদও ইতোপূর্বে কখনও দেখা যায়নি। কিন্তু এবারের নির্বাচনে মেয়ে বুলবুলি তার মায়ের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ইউনিয়নবাসী এবারই প্রথমবার মা-মেয়ের নির্বাচনী লড়াই দেখছেন। কলোনিপাড়া গুচ্ছগ্রাম এলাকার ভোটার লাইলি বেগম জানান, আমরা ভোটাররা দ্বিধা-বিভক্তিতে পড়েছি। এবার মা জীবন নাহারকে ভোট দিব নাকি মেয়ে বুলবুলি আক্তার ভোট দিব। মাঝে মাঝে চিন্তা করছি ওই পরিবারকে এবার ভোট দিব না। কারণ, ভোটের আগেই মা ও মেয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রশ্ন রেখে লাইলি বেগম বলেন, একটি পরিবারের মা ও মেয়ে কীভাবে একে অন্যের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন? এটা কীভাবে সম্ভব? শতদল আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা লাবলু মিয়া জানান, গত দুইবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে জিতেছেন মা জীবন নাহার। মাঠ পর্যায়ে এবার মায়ের অবস্থান ভালো। তবে এরই মাঝে মেয়ে প্রার্থী হওয়ায় ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনী কাজে জীবন নাহার ব্যস্ত থাকায় তার সাথে মুঠোফোনে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার ছেলে বাহাদুর মুঠোফোনে জানান, আসলে আমাদের পরিবারের তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নে বেশ সুনাম রয়েছে। আমার বাবা ইসমাইল হক এই ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ভাইস চেয়ারম্যান থাকার কারণে এলাকার ভোটাররা আমাদের সম্মান করেন এবং ভালোবাসেন। প্রতিবার ইউপি নির্বাচনে আমাদের পরিবারের একজন সদস্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়ে আসছে। আমি মনে করি, ভোটে অংশগ্রহণ করলে জনপ্রিয়তার প্রয়োজন। আমার মায়ের জনপ্রিয়তা আছে, কিন্তু আমার বোন বুলবুলির তেমন কোনো জনপ্রিয়তা নেই। অভিমান করে সে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এতে করে আমার মা জীবন নাহারের নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বেনা বলে মনে করছি। বক প্রতীকে প্রার্থী মেয়ে বুলবুলি আকতার জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমার মা নারী ইউপি সদস্য। আমি মায়ের পরিষদের সম্পূর্ণ দাপ্তরিক কাজ চালিয়েছিলাম। সরকার থেকে কোনো সেবা, ভাতা কিংবা ত্রাণ আমি তালিকা করে বিলি করতাম। বয়সের ভারে বর্তমানে কিছুটা অসুস্থও মা। গত ইউপি নির্বাচনে মা এলাকাবাসীদের বলেছিলেন, এটা আমার শেষ নির্বাচন। এরপরে আমার মেয়ে প্রার্থী হবে। তখন থেকেই আমাদের পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত। আমি ওই এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নেব। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বে এলাকাবাসীর সঙ্গে মায়ের বাসায় মিটিং করে মা আমাকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। সেই সঙ্গে মা আমাকে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু আমার ভাই বাহাদুরের চক্রান্তে মা আবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। গত ১০ অক্টোবর থেকে আমার মায়ের বাসায় যাওয়া হয়নি। আমি নির্বাচনে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তবে আমি নির্বাচনে জয়ী হবার ব্যপারে আশাবাদি। এদিকে তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে ওই পরিবারের আরেক মেয়ে সেতারা বেগম কলম প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সেতারা বেগম ওই ইউনিয়নের সাবেক সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য। রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একই পরিবারের কয়েকজন প্রার্থী হলেও ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিগতভাবে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
Advertisement (madimart)
Advertisement (sandha)
Advertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)

No comments