× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



ঘর না পেয়ে চেয়ারম্যানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভিক্ষুক

চেয়ারম্যানের কাছে সরকারি ঘর চেয়ে না পেয়ে প্রতিবাদে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দুই নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করা আবুল মুনসুর ফকির (৮০)। রবিবার (২৮ নভেম্বর) তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে চশমা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা। স্থানীয় কৃষক আসাদুজ্জামান জানান, ত্রিশালের বৈলর ইউনিয়নের উত্তর মঠবাড়ী গ্রামের আবুল মুনসুর ফকির ছোটবেলা থেকে রিকশা চালাতেন। তার রয়েছে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। বয়সের কারণে গত ১৫ বছর আগে রিকশা চালানো ছেড়ে দিয়ে ভিক্ষা করে সংসার চালাতে শুরু করেন। সামান্য ভিটেমাটিতে ছোট্ট একটি ঘরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলেন। নিজের জন্য একটি সরকারি ঘরের বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছিলেন। চেয়ারম্যান তাকে ঘর বরাদ্দ না দেওয়ায় তিনি মঠবাড়ী খালের ওপর একটি টংঘর তুলে একাকী বসবাস করতে থাকেন। এরপরই চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রতীক হিসেবে ছাতা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন এবং মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করে আসছিলেন। তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন এবং ছাতা প্রতীকের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তিনি কাঙ্ক্ষিত প্রতীক পাননি। তার ভাগ্যে জোটে চশমা প্রতীক। এরপর তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। মঠবাড়ী বকশিপাড়ার বাসিন্দা শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘মুনসুর ফকিরের চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সরকারি ফি এবং নির্বাচনি পোস্টার ছাপানোয় এলাকাবাসী সহায়তা করেছেন। তিনি নিজেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করেছেন। একজন ভিক্ষুক হয়ে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, চেয়ারম্যানের কাছে ঘর চেয়ে না পেয়ে এর প্রতিবাদে তিনি নির্বাচনে অংশ নেন। তবে মুনসুর ফকির খুব ভালো মনের একজন মানুষ। আন্দ্রাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসা নারী ভোটার বিলকিস আক্তার বলেন, ‘ভিক্ষা করে সেই টাকায় একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল মুনসুর ফকির একাকী ভোটারের বাড়ি বাড়ি রাতে-দিনে ঘুরেছেন। আমাদের বাড়িতেও নির্বাচন চলাকালে দুই থেকে তিনবার গেছেন ভোট চাইতে।’ ভিক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আবুল মুনসুর ফকিরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, এই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কোনও মোবাইল ফোন নেই। এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয়। সময়মতো আবেদন না করায় আবুল মুনসুর ফকির ঘর বরাদ্দ পাননি। ঘর বরাদ্দের বিষয়ে চেয়ারম্যানদের কোনও ক্ষমতা নেই।’ তবে ঘর না পেয়ে একজন ভিক্ষুক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনা চলছে জানান তিনি। Advertisement (madimart)
Advertisement (sandha)
Advertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)

No comments