ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়াতে নিম্নমানের রাস্তা নির্মাণে এলাকাবাসীর বাধা
নিম্নমানের ইট, খোয়া আর নাম সর্বস্ব বালি দিয়েই রাস্তার নির্মাণ কাজ করায় সচেতন এলাকাবাসী নিজেরাই আটকে দিয়েছে কাজ। ফিরিয়ে দিয়েছে ইট নামের পোড়া মাটির তিনটি ট্রাকসহ নির্মাণ শ্রমিকদের।
ঘটনাটি ঘটেছে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া জিসিএম হতে আটঘরিয়া উপজেলা হেডকোয়াটার পর্যন্ত ৬.৫১৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজে ।
সরকারী প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি ঈশ্বরদীর তত্ত্বাবধানে কাজটি করছে পাবনার মেসার্স জিনাত আলী জিন্নাহ লিমিটেড কনস্ট্রাকশন ফার্ম। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের মেরামত ও সড়কের পার্শ্ব প্রসস্থতার জন্য সরকারী প্রকল্পের আওতায় ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৪২ হাজার ৭২ টাকা।
এলজিইডি ঈশ্বরদীর তত্ত্বাবধানে শিডিউল অনুযায়ী সড়কটি ১৮ ফুট চওড়া ও ৬ ইঞ্চি খোয়া এবং ৪০ মিলি কার্পেটিং দিয়ে মেরামত করার কথা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে খোয়া ঢালাইয়ের সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৩ ইঞ্চি রাবিশ খোয়া দিয়ে প্রায় ২.০০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছে। কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠিানটি প্রসস্থ সাববেজটির ২ কিলোমিটার ভালমতো রোলার না করেই তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের খোয়া (পোড়া মাটি) ব্যবহার করেছেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে সড়কের কাজে বাঁধা দেন।
এলাকার আথাইলশিমুল, মাড়মী, মুনশিদপুর ও সুলতানপুর গ্রামের অনেকেই অভিযোগ করে জানান, ঠিকাদার সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারে দিনের বেলায় ট্রাক ট্রাক রাবিশ খোয়া (পোড়ামাটি) এনে সাববেজে ঢেলে ছিটিয়ে দিয়েছে। শনিবার সকালে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে কাজে বাঁধা দিলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তার ০৩ টি ট্রাক ভর্তি রাবিশ খোয়া নিয়ে পাবনাতে ফেরত যায়।
স্থানীয় মো. জাহাবুল ইসলাম জানান, অতিনিম্ন মানের খোয়া দিয়ে রাস্তা তৈরি হলে রাস্তা টেকশই হবেনা এবং অত্র এলাকার দূর্ভোগ আগের মতই রয়ে যাবে। আমরা চাই টেকসই রাস্তা।
আথাইল শিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফিল উদ্দিন বলেন, সরকারী নিয়মানুযায়ী রাস্তার কাজে মানসম্মত ইটের ব্যবহারের কথা থাকলেও আমাদের এই রাস্তার কাজ করছে ৩নং ইট দিয়ে, তাই আমরা সবাই মিলে বাধা দিয়েছি । বাধা দেয়ার পরে তারা খারাপ ইটের খোঁয়া সরায়ে নিচ্ছে। এমন ইট দিয়ে যদি কাজ চলে রাস্তা খুবই খারাপ হবে তাতে আমাদের চলাচলের খুবই অসুবিধা হবে।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নির্মাণাধীন রাস্তাটি দীর্ঘদিন সমস্যার পরে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা লক্ষ করছি রাস্তার যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে সেটা যথাযথভাবে হচ্ছেনা। নিম্নমানের ইট খোয়া দিয়ে তারা কোনমতো লোক দেখানো কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বার বার বলার পর ও খারাপ খোয়া ফেলে নামমাত্র রোলার করে চলে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী এলজিইডির কর্মকর্তাদের প্রতি অভিযোগ করে জানান, ঠিকাদারের সঙ্গে তাদের যোগসাজস আছে এজন্য কেউই মাঠে নেই। ঝুলানো হয়নি কোনো কার্যতালিকার (ওয়ার্ক অর্ডার) সাইনবোর্ড। আবার রোডের ধারে সীল করা গাছগুলো না কেটেই এজিং করা হয়েছে। যার ফলে কোথাও ১৭ ফিটে আবার কোথাও ১৮ ফিট প্রসস্থে রাস্তা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য ঠিকাদার জিনাত আলী জিন্নাহ কে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে এলজিইডি ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবির জানান, নিম্নমানের খোয়া দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং ৩ (তিন) ট্রাক মালামাল রাবিশ খোয়া ফেরত পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে সঠিক মানের ইট, খোয়া দিয়ে কাজের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে মৌখিক ভাবে আদেশ প্রদান করেছি।
Advertisement (madimart)
Advertisement (sandha)
Advertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)
No comments