× প্রচ্ছদ ঈশ্বরদী পাবনা জাতীয় রাজনীতি আন্তর্জাতিক শিক্ষাজ্ঞন বিনোদন খেলাধূলা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্বাচন কলাম
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঈশ্বরদী খেলা প্রযুক্তি বিনোদন শিক্ষা



দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে দক্ষিণাঞ্চলে

দুই ইউনিটের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পর দেশে আরো দুটি করে মোট চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণে সরকার সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। ২০৩০-৩১ ও ২০৪০-৪১ সালে এই নতুন ইউনিটগুলো নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সম্ভাব্য স্থান নির্বাচনে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে পটুয়াখালী ও বরগুনার পাঁচটি স্থান। চিহ্নিত স্থানগুলোর মধ্যে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলে বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ি (পূর্ব) এলাকাটিকে ১ নম্বর অবস্থানে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে স্থান নির্ধারণে গঠিত কারিগরি কমিটি বিভিন্নভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রাথমিকভাবে পাঁচটি স্থান চিহ্নিত করেছে। এসব স্থানগুলো হলো- বরগুনা সদর উপজেলার কুমিরমারা, তালতলী উপজেলার বড়বগি ইউনিয়নের নিশানবাড়ি (পূর্ব) ও নিশানবাড়ি (পশ্চিম) এবং পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালি উপজেলার মৌডুবি ও চর মোনতাজ এলাকা। কারিগরি কমিটির সিইজিআইএস স্ট্যাডি, হাইড্রোলজিক্যাল, হাইড্রোজিওলজিক্যাল, সিসমোলজিক্যাল ও টেকনিক্যাল এবং ভূ-তাত্ত্বিক ও ভূ-পদার্থিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পটুয়াখালী ও বরগুনার এই পাঁচটি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্থানগুলোর মধ্যে সব পরীক্ষায় নিশানবাড়ি (পূর্ব) স্থানটিকে এক নম্বরে রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই নিশানবাড়ি (পূর্ব) এলাকাতেই দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান নির্ধারণের বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। মানুষ ও পরিবেশের নিরাপত্তা, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ব্যয় এবং স্থান চিহ্নিতকরণের ওপর নির্ভর করে। তাই প্রকল্পের স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ)’ নির্দেশনার পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ), ‘বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর (ডিওই) ও দেশীয় অন্যান্য নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের বিধিনিষেধ শতভাগ মেনে চলতে হয়। সব সংস্থা নির্দেশনা ও প্রকল্পের কারিগরি কমিটির সুপারিশকৃত সিইজিআইএস-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ সংক্রান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে এই পাঁচটি স্থান প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। তখনই তিনি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরো একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে একটি ‘কোর কমিটি’ গঠন করে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু স্থান চিহ্নিত করতে পৃথক দুটি কমিটিও গঠন করা হয়। এসব কমিটি গঠনের সঙ্গে সঙ্গে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে এই কমিটিগুলো প্রাথমিকভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ জেলায় আটটি স্থান চিহ্নিত করে। এগুলো হলো- পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পক্ষিয়ার চর, বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্টার চর, একই উপজেলার নিদ্রার চর, পাথরঘাটা উপজেলার টেংরার চর ও আমতলী উপজেলার আলিসার মোড়, ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মহুরীর চর, খুলনার টিয়াঘাটা উপজেলার চর হালিয়া এবং নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বয়ার চর। প্রকল্প বাস্তবায়ন ও স্টিয়ারিং কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জরিপকালে জানা যায় পক্ষিরার চরের ৪৭৫ একর জমি ‘রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেট’কে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খোট্টার চরের ১০০ একর জমি কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই আইএসও টেক ইলেক্ট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেডকে ২০১৭ সালে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। নিদ্রার চরের প্রায় ২৬৫ একর জমি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শিপইয়ার্ড নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কমিটি দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনা, ভোলা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, মাদারীপুর ও সাতক্ষীরাসহ ১৫টি জেলার প্রশাসকদের কাছে নদী অথবা সাগর তীরে আনুমানিক দুই হাজার একর জমির প্রাপ্যতা এবং ওই জমির মালিকানা ও ভূমি ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি দেয়। ভোলা, ফেনী ও সাতক্ষীরায় কোনো জমি নেই বলে জানানো হয়। অন্যদিকে কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বাগেরহাট ও খুলনার জেলা প্রশাসকরা কোনো তথ্য জানায়নি। স্টিয়ারিং কমিটি তখন প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলার চিহ্নিত স্থানগুলোর ওপর সাইট সার্ভে পর্যায়ের সিসমোলজিক্যাল, হাইড্রোলজিক্যাল, হাইড্রোজিওলজিক্যাল ও মেটিওরোলজিক্যাল সার্ভেসহ ভূমির পরিমাণ, ভূমির ধরন ও গঠন, ব্যবহার ও স্থায়িত্ব, জনসংখ্যা, জনবসতি, শিল্প কলকারখানা, বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের মজুত, বিষাক্ত গ্যাসের নিঃসরণ, বিস্ফোরক পদার্থের মজুত, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সামরিক স্থাপনা, বিমানবন্দরের অবস্থান, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন ব্যবস্থা, পরিবেশগত বিষয়ে আইনগত বিধি, লোড সেন্টার, বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন ও পাওয়ার গ্রিডের অবস্থানের খোঁজ নেয়া হয়। এরপর প্যারামিটারসহ বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের গতি, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, বন্যা ও সারফেস ওয়াটারে গুণগতমান সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পটুয়াখালী ও বরগুনার পাঁচটি স্থানকে সর্বশেষ পর্যায়ে চিহ্নিত করা হয়।
Advertisement (sandha)
A
dvertisement (pabna sweet)
Advertisement (school)

No comments