সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ
ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ (২ এপ্রিল) শনিবার। ২০২০ সালের এইদিনে ৮১ বছর বয়সে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মৃত্যুর সময় তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সাংসদের দায়িত্বে ছিলেন। দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পাবনার ঈশ্বরদীতে পরিবারের পক্ষ থেকে আজ শহরের আলিবদ্দীন সড়কের বাসভবন ও উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নে তাঁর নিজ গ্রামের বাড়িতে কোরআনখানী, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।
প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ১৯৪০ সালের ১০ মার্চ পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর শানিকদিয়া প্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম জোবেদা খাতুন।
শামসুর রহমান শরীফ ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন। তখন তিনি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। ভাষার দাবিতে মিছিল করায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে ও জেলে বন্দি রাখে। ১৯৫৯ সালে আইয়ুব খানের মার্শাল ল’ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়।১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে গ্রেফতার হন। ১৯৬৭ সালে আবারও তিনি কারাবরণ করেন ছয়দফা আন্দোলনের প্রচার করতে গিয়ে। ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিলো। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাবনার মাধপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে তার বাহিনীর ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা গুলিতে মারা যায় এবং পাকিস্তানি সেনাদের অনেকেই ওই যুদ্ধে হতাহত হয়।
রাজনৈতিক জীবনে প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর প্রথম সাফল্য আসে ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও পরে ২০০৬ সালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে মনোনীত হন। ২০১৪ সালে আবারও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। মৃত্যু পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।
শামসুর রহমান শরীফ ডিলু, ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকারের আমলে টানা ৫ বছর কারারুদ্ধ ছিলেন এবং সামরিক শাসক এরশাদ সরকারের আমলেও তাকে কারাবরণ করেন। পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে সর্বপ্রথম ১৯৯৬ সালে দলীয় মনোনয়নে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০১, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বারের ক্ষমতায় গেলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শামসুর রহমান শরীফ বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব দেন। তাঁর ৫ ছেলে ৫ মেয়ের মধ্যে মেজ ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। বর্তমানে ৪ ছেলে ৫ মেয়ে।
No comments