দলবল দিয়ে সড়কের গাছ কাটলেন বিএনপি নেতা
বগুড়ার গাবতলী পৌরশহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে শাহাবাজপুর কালুডাঙ্গা গ্রামে হেলিপ্যাডসহ বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ সুমন। সেই বাড়িতে যাতায়াতের সড়কটি বছর পাঁচেক আগে এলজিইডির মাধ্যমে পাকাও করে নিয়েছেন। সড়কটি আরও প্রশস্ত করতে এবার পাশের ১০টি পরিণত ফলদ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এ নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে শতাধিক লোক নিয়ে গ্রামের বুরুজ ভিটাপাড়া সড়কের পাশের গাছগুলো কাটেন সুমন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, গাছগুলোর কারণে দূর থেকে ওই নেতার বহুতল বাড়ির আলোকসজ্জা দেখা যায় না। এ ছাড়া অপ্রশস্ত সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হওয়ায় সুমনের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছিল গাছগুলো। এ জন্য বাইরে থেকে লোকজন এনে তিনি গাছগুলো কেটে ফেলেন। সুমন অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করে গ্রামবাসীই গাছগুলো কেটেছে বলে দাবি করেন।
এদিকে এ ঘটনায় রোববার মধ্যরাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনওর কার্যালয়ের নায়েব আনিছুর রহমান গাবতলী মডেল থানায় মামলা করেছেন। এতে সুমন ও তাঁর চাচার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে আজ দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সরেজমিন দেখা যায়, আট ফুটের পাকা সড়কটির পাশে আম, বেল, চালতা ও জলপাই গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি গাছে আমও ধরেছিল।
প্রায় ২০ বছর আগে সড়কে নিজ বাড়ির সামনে গাছগুলো রোপণ করেছিলেন স্কুলশিক্ষক আব্দুর রহমান প্রামাণিক। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই গাছগুলো কেটে ফেলতে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন সুমন। শনিবার দুপুরে বহিরাগতদের নিয়ে এসে গাছগুলো কেটে ফেলে রেখে যান। ওই স্থান থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরেই সুমনের বিলাসবহুল বাড়ি। হেলিপ্যাড, দামি ফুলগাছে ঘেরা বিদেশি টাইলসে মোড়ানো বাড়িটি দূর থেকেই চোখে পড়বে যে কারও। বাড়ির প্রাচীরেও রয়েছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা।
গাছ কাটার বিষয়ে সুমন বলেন, সড়কটি আমার বাবা হারুনুর রশিদ মাস্টারের নামে করা। পরিচিতদের মাধ্যমে সড়কটির বরাদ্দও আমি এনেছিলাম। সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্ত করতে সম্প্রতি একটি বরাদ্দ এসেছে। তাই গ্রামবাসী গাছগুলো কেটেছে। আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। তবে বহিরাগতদের নিয়ে আসার অভিযোগ সঠিক নয়।
বাড়ির আলোকসজ্জা দেখানোর জন্য গাছ কাটার অভিযোগ হাস্যকর বলে দাবি করেন তিনি। আর মামলার বিষয়ে বলেন, আমার ও চাচার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে শুনেছি। এখন আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে।
গাবতলী মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সড়কের ধারের ওই গাছের মালিকানা সরকারের। এ জন্য ইউএনও অফিস থেকে মামলা করা হয়েছে। গাছগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments