চাঁদা না দেওয়ায় কৃষাণী নুরুন্নাহারসহ গুলিবিদ্ধ ৪
চাঁদার ৫ লাখ টাকা না পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছররা গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কৃষাণী নুরুন্নাহার বেগমসহ তার তিন ছেলে। এসময় কৃষাণী নুরুন্নাহারের বড় ছেলে রায়হান কবির হিরোককে (৩০) মারধর করে মোবাইল ফোন ও নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তার মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় কৃষাণী নুরুন্নাহারসহ তাঁর বড় ছেলে রায়হান কবির হিরোক, মেজো ছেলে সিরাজুল ইসলাম মনিক ও ছোট ছেলে মিশুক বিশ্বাসসহ মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর পূর্বপাড়া মাস্টারের মোড় এলাকাতে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কৃষাণী নুরুন্নাহারের বড় ছেলে আহত রায়হান কবির হিরোক বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, মানিকনগর গ্রামের আলতাব শাহর মাজারে বার্ষিক ওরশ অনুষ্ঠানের নামে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে কৃষাণী নুরুন্নাহার বেগমের বাড়িতে যান কয়েকজন যুবক। সেখানে উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবু মালিথার ছেলে যুবদলকর্মী রাব্বী মালিথা ওরশ শেষে আরো ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই চাঁদার টাকা না দিলে কৃষাণী নুরুন্নাহারকে হত্যার হুমকি দেন।
তারই জের ধরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নুরুন্নাহারের বড় ছেলে রায়হান কবির হিরোক নিজ কর্মস্থল ইসলামী ব্যাংক থেকে ফেরার পথে মানিকনগর মাস্টারের মোড় এলাকায় সন্ত্রাসী আরিফ বাঙ্গালের নেতৃত্বে, স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবু মালিথা তার ছেলে রাব্বি মালিথা ও রাজিব মালিথা, শফিকুল, সজিবসহ বেশ কয়েকজন হিরোকের মোটরসাইকেল আটকে অপহরণের চেষ্টা করেন। এ সময় খবর পেয়ে হিরোকের ছোট দুই ভাইসহ চারজন দুটি মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চিৎকার করলে তাদের দিকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের পর দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। হিরোকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও আনুমানিক নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। একইসঙ্গে হিরোকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি তারা নিয়ে যান।
কৃষাণী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, বিএনপির স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীরা ওরশের নামে চাঁদা দাবি করলে আমি তিন হাজার টাকা তাদের দিয়েছি। তারপরও যুবদলকর্মী রাব্বি মালিথা ওরশ শেষ হলে ৫ লাখ টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা আমার বড় ছেলেকে রাস্তায় ধরে মারধর শুরু করলে আমার ছোট দুই ছেলে মনিক ও মিশুকসহ চারজন ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় তারা আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গোলাগুলিতে আমিসহ পাঁচজন আহত হয়েছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পূর্ব শত্রু তার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
No comments